মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগরে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অপরাধে ছাত্রলীগের ১০ নেতাকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা কমিটি। এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে শমশেরনগর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুর রহমানকে কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হয়। ৪ ডিসেম্বর রাতে কমলগঞ্জের শমশেরনগরে ইউনিয়ন যুবলীগের পক্ষ থেকে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মঞ্চে অবস্থান নিয়ে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রাহেল মতলিব তরফদার ও কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এই ঘটনায় রাহেল মতলিবের পক্ষে ছাত্রলীগের একটি অংশ সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করে। কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগ বুধবার রাতে ভানুগাছ বাজারে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জরুরি সভা করে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই ঘটনার জন্য শমশেরনগরের সুজা মেমোরিয়াল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক পাভেল আহমদ এবং শমশেরনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য মুহিবুল ইসলাম, মোস্তাকিম আহমদ, মুজিবুর রহমান, শেখ মাজহারুল ইসলাম, জুনেদ আহমদ চৌধুরী, মিসতা আহমদ, রাসেল আহমদ, ইমন আহমদ ও ফয়ছল আহমদকে বহিষ্কার করা হয়। তবে ওই বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া অগঠনতান্ত্রিক বলে দাবি করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের একাংশের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী বৃহস্পতিবার রাতে ঝাড়ু নিয়ে শমশেরনগর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এই সময় সানোয়ার হোসেনের সমর্থনেও দলটির অপর একটি অংশের নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। দুই পক্ষ মিছিল করায় শমশেরনগরে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে উপজেলা যুবলীগ সদস্য আকমল হোসেন শমশেরনগর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোপাল বর্মাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় শমশেরনগরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মুহিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি এলাকার ছাত্রলীগের ১০ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, যা গঠনতন্ত্রবিরোধী। ছাত্রলীগের ১০ নেতাকে বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করলেও এ সম্পর্কে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদুল আলম বলেন, সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল আলী বলেন, ৪ ডিসেম্বরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের একটি অংশ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ১০ নেতাকে বহিষ্কার করায় এখানে উত্তেজনা হয়েছিল। গতকাল রাতে এ উত্তেজনা নিরসনে শমশেরনগর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জরুরি সভা করেছেন।