খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এলেও বাংলাদেশে এখনো ধান উৎপাদনের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির মতে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ দেশের সরকারের উচিত শুধু ধান উৎপাদনের প্রতি বেশি মনোযোগী না হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কৃষিপণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনা।
বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশে গ্রামীণ প্রবৃদ্ধির গতিশীলতা : টেকসই দারিদ্র্য বিমোচন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে কৃষি প্রধান নিয়ামকের ভূমিকায় রয়েছে। তবে এখন মৎস্য, পশু পালন, বনায়নসহ উচ্চ মূল্যমানের কৃষি উৎপাদনের দিকে যেতে হবে, যাতে কৃষকের আয় ও পুষ্টির জোগান বাড়ে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শামসুল আলম, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক কার্যালয়ের প্রধান চিমিয়াও ফান, বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ মাথুর গৌতম, সংস্থার অ্যাগ্রিকালচার গ্লোবাল প্র্যাকটিস উইংয়ের পরিচালক ইথিল সেনহোসার ও প্রজেক্ট ম্যানেজার মার্টিন ভ্যান নিওকপ বক্তব্য দেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, কৃষির পাশাপাশি অকৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি জোরদারে সরকার বেশ কিছু নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পরিবহন অবকাঠামোর সুযোগ সম্প্রসারণে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হচ্ছে। এই খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগও হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, বড় শহরগুলোর সঙ্গে গ্রামীণ যোগাযোগ সম্প্রসারণ হলে অকৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে। একই সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, যা কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেতে সাহায্য করবে।
চিমিয়াও ফান বলেন, ‘গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে উল্লেখ করার মতো কৃষি উৎপাদন বেড়েছে। এটি স্বল্প আয়তনের এ দেশের বিপুল পরিমাণ মানুষের প্রত্যেকের খাদ্য স্বংসম্পূর্ণতা এনে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ এখনো শুধু ধান উৎপাদনের প্রতি বেশি মনোযোগী। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কৃষি উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনা উচিত।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের গ্রামীণ প্রবৃদ্ধি মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। অকৃষি খাতের প্রতি মনোযোগ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.