প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ, বাণিজ্য, জ্বালানি ও মহাকাশসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ২০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য চূড়ান্ত করা হচ্ছে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে এগুলোর পাশাপাশি আরও কয়েকটি খাতেও কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও দুই দেশ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রস্তুতির জন্য গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক। জানা গেছে, আসন্ন সফরে কোন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত হয়েছে এবং অন্যগুলো কী অবস্থায় আছে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের বিষয় তিস্তা চুক্তি সই ও ভারতের সম্মতিতে গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ শুরুর প্রসঙ্গগুলোও গতকালের আলোচনায় এসেছে। শেখ হাসিনার সফরে এ দুটি বিষয় বাংলাদেশ অগ্রাধিকার দেবে। ঋণচুক্তির পরিবর্তে এবার নির্দিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত। বন্দর, রেল ও সড়ক যোগাযোগসহ অবকাঠামো খাত ও ব্যবসা-বাণিজ্য, মহাকাশসহ বিভিন্ন খাতের প্রকল্প দুই পক্ষ চূড়ান্ত করার জন্য কাজ করছে। এ ছাড়া ভারত থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কেনার বিষয়েও সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এ বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার জন্য ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর গত ৩০ নভেম্বর ঢাকায় আসেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন। এসব আলোচনায় মনোহর পারিকর দুই নিকট-প্রতিবেশীর সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সামর্থ্য ও সক্ষমতা বাড়াতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ সফরের সময় ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার এক নতুন রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেন। নতুন রূপরেখাটিতে সমরাস্ত্র সরবরাহ বাড়ানো, প্রযুক্তি বিনিময়, প্রশিক্ষণ ও যৌথ মহড়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা বাড়ানোর উপাদানগুলো থাকছে। গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের অনুরোধে সফরটি পিছিয়ে যায়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.